Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কালিজিরা কালোহীরা

কালিজিরা অতি জনপ্রিয় ও সুপরিচিত একটি ফসলের নাম। কালিজিরা বৈজ্ঞানিক নাম Nigella sativa L, Ranunculaceae, পরিবারভুক্ত বর্ষজীবী, বীরুৎ জাতীয় একটি উদ্ভিদ। Nigella sativa কে আরবি ভাষায় বলা হয় হাব্বাত-আল-বারাকাহ অর্থাৎ আশীর্বাদপুষ্ট বীজ, যার ফল শুষ্ক বীজকোষ হিসাবে পরিচিত। মিসরের তৎকালীন রাজা টুট রেডের সমাধি হতে কালিজিরা আবিষ্কৃত হয় এবং সে সময় এটা পরকালে ব্যবহার করা হবে বলে বিশ্বাস করা হতো। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর থেকে কালিজিরা মসলা ও ঔষধি গাছ হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি নাম। বিখ্যাত মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনা তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ক্যানন অব মেডিসিন’ এ ‘কালোজিরা দেহের প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে’ উল্লেখ করেছেন। অতুলনীয় এ ফসলের গুণাগুণ প্রায় কিংবদন্তির মতো এবং সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর চিকিৎসায় এর গুরুত্ব দিন দিন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। এ ফসলটির উৎপত্তি মূলত পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং মধ্য প্রাচ্য থেকে ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত। কালিজিরা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল, মিসর, ইরাক, সিরিয়া, ইরান, জাপান, চীন, তুরস্ক (শিওয়ে, ২০১১) প্রভৃতি দেশে চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৩ লাখ টন কালিজিরা উৎপন্ন হয়।        


কালিজিরার গুণাগুণ ও ব্যবহার
শরীরের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কালিজিরার মতো এত কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান সম্পন্ন আর কোনো ফসল  নেই। পুষ্টিমাণ ও ঔষধি গুণাগুণসহ কালিজিরা বহু গুণে গুণান্বিত। তাই ছন্দাকারে বলা যায়- ঔষধি গুণে অনন্য, কালিজিরা-খেয়ে হও ধন্য’। কিংবা ‘কালিজিরা কালোহীরা, দূর করে মৃত্যু ছাড়া সকল পীড়া’। কালিজিরার বীজে রয়েছে শর্করা, আমিষ, ফ্যাটি এসিড, অ্যামাইনো এসিড, সিস্টিন, মিথিওনিন ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি ১, ভিটামিন-বি ২, নিয়াসিন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় খাদ্যোপাদান। এছাড়াও বীজে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, দস্তা, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের মতো মৌল উপাদান রয়েছে। কালিজিরায়
Thymoquinone, Nigellone, Melanthin নামক যৌগ পাওয়া যায়, যা ওষুধ শিল্পের মূল উপাদান হিসাবে ব্যবহার হয়। মূলত বীজই ব্যবহার্য্য অংশ। কালোজিরার বীজ উদ্দীপক, স্মৃতিশক্তি বর্ধক, বায়ুনাশক, হজম বৃদ্ধিকারক, জীবাণুনাশক, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও কালিজিরা বহুবিধ রোগ বিশেষ করে মাথাব্যথা, দাঁতব্যথা, ফোঁড়া সারাতে, চুল পড়া রোধে, বহুমূত্র, হাঁপানি, উদরাময়, সর্দি ও চর্মরোগ নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। তাছাড়া অনিদ্রা, মুখশ্রী সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা, দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা, আহারে অরুচি দূরীকরণে কালিজিরা উপযোগী ভূমিকা পালন করে থাকে। কালোজিরার গুঁড়া নিয়ম করে খেলে আর্থ্রাইটিস রোগ উপশম হয় ও প্রসূতি মহিলাদের দুধের প্রবাহ ও পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে (জে.এস.প্রুথি ১৯৭৬)। এমনকি ধনুষ্টংকারে শিরদাঁড়ায় সেঁক দেয়ার জন্য কালিজিরার পাতার ক্বাথ ব্যবহার হয়। তাই সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল জীবনে কালিজিরার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে এবং মানব দেহকে এর নিজস্ব প্রাকৃতিক নিয়মে সুস্থ করে তোলায় সহযোগিতা করে।


কালিজিরা ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি অপ্রধান মসলা ফসল হিসাবে পরিচিত। ব্যবহার ও উৎপাদনের দিক থেকে গৌণ হলেও এদেশের রসনাবিদদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ মসলা। পাঁচফোড়নের একটি অন্যতম উপাদান এ কালিজিরা। রন্ধনশালায় দৈনন্দিন বিভিন্ন খাবার তৈরিতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। কালিজিরার বীজ সুগন্ধি, বেকারি ও ওষুধ শিল্পে ব্যবহার হয়ে থাকে। বিভিন্ন আর্য়ুবেদিক, হারবাল, ইউনানি কোম্পানিগুলোর ওষুধ তৈরির কাঁচামাল হিসাবে কালিজিরা ব্যবহার করায় এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।


কালিজিরার তেল অতি উচ্চমানের বিভিন্ন অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড, যেমন- লিনোলেনিক (ওমেগা-৩), লিনোলিক (ওমেগা-৬),  অলিক এসিড (ওমেগা-৯) সমৃদ্ধ। এছাড়া কালিজিরা তেলে বিভিন্ন সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড যেমন-মিরিস্টিক এসিড, পামিটিক এসিড, স্টিয়ারিক এসিড, অ্যারাকিডিক এসিড উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে। তেলে ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি থাকায় রক্তে কোলেস্টরলের পরিমাণ কমায়। সুতরাং ওমেগা-৬ এবং ওমেগা-৯ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ কালিজিরা তেল উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং ওমেগা-৬ ও ওমেগা-৯ ফ্যাটি এসিড তেলের সংরক্ষণকাল বাড়ায়। এছাড়া কালিজিরা তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (আলফা টোকোফেরল), অ্যাস্টিটিউমার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ রয়েছে।


এমনকি কালিজিরা ফুলের মধুও অত্যন্ত উপকারী। একমাত্র মৌমাছিই কালিজিরা ফুলের পরাগায়ন ঘটায়। কালিজিরা ফসলে ক্ষেত্রে মৌমাছি বাক্স স্থাপন করে দেখা গেছে, ফলন প্রায় ১০-১২% বৃদ্ধি পায় এবং বীজের গুণাগুণও অতি উচ্চমানের হয়।


পবিত্র ধর্ম গ্রন্থে কালিজিরা
হজরত আনাস (রা.) বর্ণনায় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যখন রোগ-যন্ত্রণা খুব বেশি কষ্টদায়ক হয় তখন এক চিমটি পরিমাণ কালিজিরা নিয়ে খাবে তারপর পানি ও মধু সেবন করবে। (মুজামুল আওসাত তাবরানী)। হযরত কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘প্রতিদিন ২১টি কালিজিরার ১টি পুটলি তৈরি করে পানিতে ভিজাবে এবং পুটলির পানির ফোঁটা নাসারন্ধ্রে (নাশিকা, নাক) ব্যবহার করবে (তিরমিজি, বোখারি , মুসলিম)। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন- ‘তোমরা কালিজিরা ব্যবহার করবে, কেননা একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সর্বরোগের মুক্তি এতে রয়েছে’ (বোখারি শরিফ, ৫৬৮৭)। প্রতিটি পবিত্র ধর্মগ্রন্থে মধু সেবনের উপকারিতা এবং কার্যকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত রয়েছে, ‘আপনার পালনকর্তা মৌমাছিকে আদেশ দিলেন : পর্বতে, গাছে ও উঁচু চালে বাড়ি তৈরি কর, এরপর সর্বপ্রকার ফুল থেকে খাও এবং আপন পালনকর্তার উন্মুক্ত পথে চলো। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার (সূরা আন-নাহল, আয়াত : ৬৮ ও ৬৯)। আল্লাহর হুকুম, রহমত ও কুদরতে কালিজিরার মধুও প্রতিটি রোগের ওষুধ।


বাংলাদেশে কালিজিরা
বাংলাদেশে ১৪,৭৪২ হেক্টর জমিতে ১৬,৫২৬ মেট্রিক টন কালিজিরা উৎপন্ন হয় (সূত্র : ডিএই, ২০১৭)। ফরিদপুর, মাগুরা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও জামালপুর জেলার উঁচু ও মাঝারি উঁচু এবং দোঁ-আশ থেকে বেলে-দোঁ-আশ মাটিতে চাষাবাদ বেশি হয়। মাটির পিএইচ
(pH) ৭.০-৭.৫ এবং উচ্চমাত্রায় অনুজীবের কার্যক্রমসম্পন্ন বেলে দোঁ-আশ মাটি কালিজিরা চাষের জন্য উত্তম। মে ২০১৭ প্রকাশিত বিবিএসের তথ্য মতে, ২০১৫-১৬ সালে ৫২০ মেট্রিক টন কালিজিরা (HS Code 0909-Black Cumin Seeds) ৫ কোটি ২২ হাজার টাকার বিনিময়ে রফতানি করা হয়। বাংলাদেশে কৃষক পর্যায়ে ফসলটির হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৬০০-৭০০ কেজি।
 

কালিজিরার গবেষণা, অর্জন এবং সম্প্রসারণ
প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরার চাষাবাদ হয়ে থাকলেও বাংলাদেশে অতীতে কালিজিরা নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো গবেষণা পরিলক্ষিত হয়নি বললেই চলে। তবে মসলা গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে জার্মপ্লাজম সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৯৯৭-৯৮ সাল হতে মূল্যায়ন ও বাছাই পরীক্ষার মাধ্যমে। পরবর্তীতে প্রাথমিক ফলন পরীক্ষা, অগ্রবর্তী ফলন পরীক্ষা ও আঞ্চলিক ফলন পরীক্ষার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ যাচাই বাছাই করে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ‘বারি কালিজিরা-১’ নামে কালোজিরার একটি উচ্চফলনশীল জাত চাষাবাদের জন্য উদ্ভাবন করা হয় এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সার, সেচ  ও রোগ বালাই ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়।


জাত উদ্ভাবনের পর বিগত বছরগুলোতে এর বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়। কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণে  লক্ষ্যে বিগত বছরগুলোতে বারি কালিজিরা-১ এর মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন এবং বীজ বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রমে ব্যবহার, বেসরকারি সং¯হায় সরবরাহ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষা গবেষণা এবং পরবর্তী মৌসুমে গবেষণা কাজের জন্য কালিজিরা বীজ সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়া প্রযুক্তি হস্তান্তরের নিমিত্তে ২০১৭-১৮ সালে পাবনা, ফরিদপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম এবং রংপুর এলাকায় ৫টি ব্লক প্রদর্শনী (প্রতিটি ব্লক ৪-৫ বিঘা) স্থাপন করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।


বারি কালিজিরা-১ এর বৈশিষ্ট্য
জাতটির জীবনকাল ১৩৫-১৪৫ দিন। এর উচ্চতা ৫৫-৬০ সেন্টিমিটার। প্রতিটি গাছে প্রায় ৫-৭টি প্রাথমিক শাখা এবং ২০-২৫টি ফল থাকে। প্রতিটি ফলের ভেতরে প্রায় ৭৫-৮০টি বীজ থাকে যার ওজন প্রায় ০.২০-০.২৭ গ্রাম। এ জাতের প্রতিটি গাছে প্রায় ৫-৭ গ্রাম বীজ হয়ে থাকে। এবং ১০০০ বীজের ওজন প্রায় ৩.০০-৩.২৫ গ্রাম। হেক্টরপ্রতি এর গড় ফলন ০.৮০-১.০ টন। স্থানীয় জাতের তুলনায় এর রোগবালাই খুবই কম।


রাসায়নিক উপাদান
কালিজিরার তেল অত্যন্ত পুষ্টিকর, ঔষধি গুণাগুণ সমৃদ্ধ এবং অ্যারোমেটিক গন্ধযুক্ত। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে কালিজিরা, সরিষা ও সয়াবিন বীজের নমুনার রাসায়নিক বিশ্লেষণের তুলনামূলক প্রাপ্ত তথ্য নিম্নরুপ

ফসলের নাম

শর্করা (%)

আমিষ (%)

ফ্যাট/তেল (%)

বারি কালোজিরা-১

২৮-৩০

২২-২৮

২৭-৩১

বারি সরিষা-১৪

১৮ .০

২০-২৪

৩৫-৪২

বারি সয়াবিন-৬

১৬-২০

৪০-৪৫

১৮-২০

 

নমুনার নাম

(তেল)

ফ্যাট/তেল

(%)

সম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড  (%)

অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড (%)

মিরিস্টিক

পামিটিক

স্টিয়ারিক

অ্যারাকিডিক

অলিক

(ওমেগা-৯)

লিনোলিক

(ওমেগা-৬)

কালোজিরা

২৭-৩১

০.২৪

১৪.৫০

২.৫৮

০.২৯

২১.২১

৫৭.৩৭

সরিষা

৩৫-৪২

০.০৫

২.৮৭

১.৪৬

৫.৬৩

১৬.৫৩

১৫.০৯

সয়াবিন

১৮-২০

০.০৯

১০.৯৫

৩.১৫

০.২৫

৩১.৮৯

৪৭.


কালিজিরা, সরিষা ও সয়াবিন বীজের রাসায়নিক বিশ্লেষণের তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায়, কালিজিরা তেলে পামিটিক এসিড ও লিনোলিক এসিডের পরিমাণ অন্য তেলের তুলনায় বেশি এবং ফ্যাট, বিভিন্ন সম্পৃক্ত এসিড, অলিক এসিডের পরিমাণও সন্তোষজনক পর্যায়ে বিদ্যমান।


কালিজিরার ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা
কালিজিরার নতুন নতুন জেনেটিক মেটারিয়াল সংগ্রহ ও মূল্যায়নের পাশাপাশি সারের পরিমাণ নির্ধারণ, সেচ ব্যবস্থাপনা, রোগ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা, তেল বের করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে ও কিছু প্রযুক্তি নির্ণয়ের কাজ চলছে। বর্তমানে মসলা গবেষণা কেন্দ্রে দেশ ও  বিদেশে থেকে সংগ্রহ করা প্রায় ৯ টি জার্মপ্লাজম রয়েছে যা থেকে খুব শিগগিরই আরও একটি উচ্চফলনশীল নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। ‘কালিজিরার জার্মপ্লাজম সংগ্রহ ও মূল্যায়ন’ শিরোনামে কালিজিরার নতুন জাত উদ্ভাবনের জন্য ২০১৬-১৭ বছরে সম্পাদিত গবেষণার ফলাফলে
BC009 Ges BC010 জার্মপ্লাজম দ্ইুটিতে বারি কালিজিরা-১ জাতের তুলনায় অধিক ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পরীক্ষাটি আরও ২ বছর সম্পন্ন করার পর নতুন জাত উদ্ভাবন করার সম্ভাবনা রয়েছে।


সীমাবদ্ধতা
কালিজিরার বহুবিধ গুণাগুণ ও ব্যবহার থাকা সত্ত্বেও কালিজিরার চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া চাহিদা অনুযায়ী দেশে কালিজিরার উৎপাদনও কম হচ্ছে। সাধারণত কালিজিরা একটি গৌণ মসলা ফসল বিধায় চাষিরা এটি চাষাবাদে খুব বেশি আগ্রহী নয় এবং যেহেতু রবি মৌসুমে অধিকাংশ ফসলের চাষাবাদ হয় সেজন্য কৃষক একক ফসল হিসাবে কালিজিরা চাষাবাদ করতে চায় না। ন্যায্য বাজারমূল্য প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা, দুর্বল বাণিজ্যিক কাঠামো, বীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনার জন্য কাক্সিক্ষত পরিমাণে কালিজিরার বীজ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কালিজিরার উৎপাদন বৃদ্ধিতে কিছু পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে যেমন কৃষকের মধ্যে কালোজিরার বীজ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর, কৃষক প্রশিক্ষণ জোরদারকরণ ইত্যাদি। গাজীপুর ও কারওয়ান বাজারে বিগত ৫ বছরের পরিবর্তনশীল বাজার মূল্যে দেখা যায় গাজীপুর ও কারওয়ান বাজার উভয় ক্ষেত্রেই কালিজিরার বাজার মূল্য ২০১৫ সালে সবচেয়ে বেশি এবং ২০১৭ সালে সবচেয়ে কম পরিলক্ষিত হয়।

কালিজিরা সংরক্ষণ ও বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে কালিজিরা এবং কালিজিরার দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রী বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
 

বাংলাদেশে কালিজিরা চাষের সম্ভাবনা
বাংলাদেশের মাটি এবং জলবায়ু কালিজিরা চাষের জন্য উপযোগী।
দেশের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও রংপুরের চরাঞ্চলে উন্নত জাতের কালিজিরার চাষ সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
কালিজিরা চাষাবাদে সেচ কম দিতে হয়, কখনও ১/২ টি সেচে ভালো ফলন পাওয়া যায় বিধায় বরেন্দ্র এলাকায় এর চাষাবাদ বৃদ্ধি করার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে।
চলনবিল এলাকায় পানি নেমে যাওয়ার পর সেখানে কালিজিরা চাষ করা যেতে পারে।


ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা এলাকার চাষিরা পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে। পেঁয়াজ বীজ ক্ষেতের চারপাশে এবং ক্ষেতের ভেতর পেঁয়াজের ১০-১৫ সারি পর কালিজিরা বপন করা যায়। এতে কালিজিরার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া অন্যান্য রবি ফসলের ক্ষেতের চারপাশেও কালিজিরা বপন করা যেতে পারে। কালিজিরা একটি অর্থকরী এবং বহুগুণে গুণান্বিত উচ্চমাণসম্পন্ন পুষ্টিকর মসলা জাতীয় ফসল। তাই এর প্রচার, গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম জোরদার করা আবশ্যক। তাছাড়া এ ফসলের  গুণাবলি ও ব্যবহারের ব্যাপকতা বিষয়ে প্রচারণার সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করার এখনই সময়।

 

কৃষিবিদ ড. রুম্মান আরা* কৃষিবিদ ড. মো. মাসুদুল হক**
কৃষিবিদ ড. শাহানা আকতার***

* এসএসও,**এসএসও,*** এসএসও আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বারি, গাজীপুর


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon